আজকের এই পোষ্টের মধ্যে আপনারা সম্পূর্ণ ক্লিয়ারেন্স পাবেন কিভাবে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করবেন বা জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার যে প্রক্রিয়াটি রয়েছে সেটি একদম সহজ আপনি চাইলেই ঘরে বসে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করতে পারবেন যদি আপনার কাছে একটি কম্পিউটার থাকে তাহল। এছাড়াও আপনি চাইলে যে কোন কম্পিউটারের দোকান থেকে আপনি জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করতে পারবেন। নিচে আমরা জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম বিস্তারিত আলোচনা করব। সম্পূর্ণ তথ্য পেতে এই পোস্টটি সব পড়ুন।

আপনার কাছে কি এখনো সেই হাতের লেখা পুরনো জন্ম নিবন্ধন কার্ড আছে? হাতের লেখা জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করে অনলাইন করতে চান? জন্ম নিবন্ধন সনদটি যে আমাদের জন্য দৈনিক জীবনে কত গুরুত্বপূর্ণ তা হয়তো বা আমরা সকলেই উপলব্ধি করতে পারি। তাই সরকার এটাকে অনলাইন করা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে।

পুরানো পদ্ধতি এখন বাদ নতুন যুগে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন দীর্ঘ লাইন, ঝামেলাপূর্ণ প্রক্রিয়া, সময় নষ্ট, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন অফিসে ছুটে বেড়ানোর সকল ঝামেলা, কাগজপত্রের ঝামেলা, নথি হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি ছিল জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার মাধ্যমে এ সকল ভোগান্তি থেকে এখন নিশ্চিন্তে থাকা যায়।

পূর্বে ইউনিয়ন পরিষদ সিটি কর্পোরেশন পৌরসভার রেজিস্ট্রিতে লিখে জন্ম নিবন্ধন সনদ করা হতো। কিন্তু এখন আর সেই সুযোগ নাই বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার দেশকে ডিজিটাল করার যে উদ্যোগ নিয়েছে সেই উদ্যোগের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন সনদ অনলাইন করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত তাই বাংলাদেশ সরকার এটি বাধ্যতামূলক করেছে।

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার প্রয়োজনীয়তা কি

শিক্ষাগত জীবন থেকে শুরু করে মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে বিভিন্ন পর্যায়ে জন্ম নিবন্ধন গুরুত্বপূর্ণভাবে জড়িত ব্যক্তিগত জীবনে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে জন্ম নিবন্ধন সনদ অপরিহার্য।জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়মপাসপোর্ট ইস্যু, বিবাহ নিবন্ধ্‌ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, সরকারি বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দান, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্য, ভোটার তালিকা প্রণয়ন, জমি রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক একাউন্ট খোলা, আমদানি বা রপ্তানি বা উভয় লাইসেন্স প্রাপ্তি, গ্যাস পানি টেলিফোন ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তি, ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টি আই এন) প্রাপ্তি ,ঠিকাদারি লাইসেন্স প্রাপ্তি, বাড়ির নকশা অনুমোদন, গাড়ি রেজিস্ট্রেশন, ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি, জাতীয় পরিচয় পত্র প্রাপ্তি। ইত্যাদি সকল প্রকার কাজে জন্ম নিবন্ধন এর প্রয়োজন হয়। জন্ম নিবন্ধন সনদে একজন ব্যক্তির নাম পরিচয় সকল দেওয়া থাকে এবং জন্ম নিবন্ধন এই একজন ব্যক্তির প্রথম পরিচ। জন্ম নিবন্ধনে এখন একটি নাম্বার দেওয়া থাকে এই নাম্বারটি ব্যবহার করে আপনি এই দেশে জন্মগ্রহণ করেছেন সেটি নির্ধারণ করতে পারবেন ডাটাবেজ থেকে তথ্য বের করা হয়ে থাকে।

এখন যেহেতু প্রতিটি পদক্ষেপ অনলাইনের মাধ্যমে করা হয় সেহেতু আপনার জন্ম নিবন্ধনটি যদি অনলাইন করা না থাকে তাহলে আপনি আপনার পরিচয় বের করতে পারবেন না অনলাইন না করার কারণে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় কাজগুলো করায় বাধাগ্রস্ত হবেন। তাই সকল কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য আপনাকে এটি অনলাইনের আওতাভুক্ত করতে হবে। কিভাবে নিবন্ধন সনদটি অনলাইন করা যায় তা জানতে হ।

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কিনা

আপনার জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করা আছে কিনা তা অতি সহজে জানার জন্য everify.bdris.gov.bd এই ওয়েবসাইটটিতে ভিজিট করবেন। ভিজিট করার পরে ১৭ টি সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন নাম্বার এবং জন্ম তারিখ চাইবে সেগুলো সঠিকভাবে পূরণ করে সার্চ করবেন।একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হল জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার পূর্বে আপনার সঠিকভাবে জেনে নিতে হবে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদটি অনলাইন করা আছে কিনা। যেহেতু পূর্বে জন্ম নিবন্ধন সনদ গুলো খাতায় রেজিস্ট্রি করা হত এবং ওই রেজিস্ট্রিতে হিসাবগুলো সংরক্ষণ করা হতো সরকার পরবর্তীতে  ডাটা এন্ট্রি করে অনলাইন করে ফেলেছে এজন্য আপনারটি অনলাইন থাকতেও পারে নাও থাকতে পারে এজন্য জন্ম নিবন্ধন যাচাই করে নিতে হবে। যদি আপনার স্বরটি পূর্বে অনলাইন করা হয়ে থাকে তাহলে আপনারা নতুন করে অনলাইন করতে হবে না।

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম

আপনার জন্ম নিবন্ধন যদি ডিজিটাল না হয়ে থাকে যদি হাতে লেখা হয় অনলাইন করা না থাকে তাহলে bdris এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার জন্য আবেদনের মাধ্যমে নিবন্ধন সনদটি অনলাইন করতে পারবেন।

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হলো আপনার হাতে যদি মোবাইল অথবা হাতের কাছে কম্পিউটার থাকে তা না হলে আপনার আশেপাশে যে কোন কম্পিউটারের দোকান থেকে এছাড়াও আপনার নিকটবর্তী ইউনিয়ন পরিষদ পৌরসভা সিটি কর্পোরেশনের তথ্য কেন্দ্র থেকে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার আবেদন করতে পারবেন।

জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার জন্য প্রথমেই আপনাকে bdris.gov.bd/br/application ওয়েব পেইজে প্রবেশ করতে হবে। এরপরে আপনার জন্মস্থান নির্বাচন করে আপনার স্থানীয় ঠিকানা যেমন বিভাগ, জেলা, উপজেলা আপনি কোন এলাকার ভোটার আপনার ওয়ার্ড সিলেক্ট করে একে একে আপনার সকল তথ্যগুলো সেখানে দাখিল করতে হবে। জন্ম নিবন্ধন আবেদন ফরমটি প্রথমে বাংলায়(ইউনিকোড) এবং পরবর্তীতে ইংরেজিতে পূরণ করার পরে যথাযথ ইডিট করে সংরক্ষণ বাটনে ক্লিক করতে হবে। যখন আপনারা সংরক্ষণ বাটনে ক্লিক করবেন তখন আবেদন পত্রটি সংশ্লিষ্ট নিবন্ধক কার্যালয়ে পৌঁছে যাবে। সংশ্লিষ্ট নিবন্ধন কার্যালয়ের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা সুন্দরভাবে যাচাই-বাছাই করার পরে আপনার আবেদনটি অ্যাপ্রুভ করবে।

আপনি যখন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করবেন তখন আপনার ব্যক্তিগত সকল তথ্য সঠিকভাবে নিবন্ধ করবেন অন্যথায় পরবর্তীতে আপনার নিবন্ধনটি সংশোধন করতে সমস্যা হবে। আবেদন করিবার পূর্বে আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হবে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন টি কোথা থেকে সংগ্রহ করতে চান, তখন আপনি আপনার সুবিধামতো সেটি নির্বাচন করবেন

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করা যায় কিভাবে

অনেকেই এই ধরনের প্রশ্ন করে যে কিভাবে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করা যায়?  প্রশ্নটি কঠিন মনে হলেও এর সমাধানটি খুবই সহজ। আপনার জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার জন্য আপনি জন্ম নিবন্ধন এর অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে ভিজিট করে আবেদন করবেন। যখন আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করবেন তখন আপনাকে একটি অনলাইন কপি দেওয়া হবে। সেই কপিটি আপনি যেকোন কম্পিউটারের দোকান থেকে প্রিন্ট করে নিবেন। তারপর সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে জমা দিবেন বা দাখিল করব।

এর প্রয়োজন হয় তখন যখন আপনি ডিজিটাল তথ্য কেন্দ্রের বাইরে বা অন্য কোথা থেকেঅথবা নিজেই জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে আবেদন করবেন। আর যদি আপনি ইউনিয়ন পরিষদ পৌরসভা অথবা সিটি কর্পোরেশন এর তথ্য কেন্দ্র থেকে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করেন সে ক্ষেত্রে কোন প্রিন্ট কপি দাখিল করা লাগেনা।

পুরনো জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম

আপনি আপনার পুরনো জন্ম নিবন্ধনটি অনলাইন করতে পারবেন। জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদনের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে আপনার বয়স ভেদে আপনাকে জন্ম নিবন্ধন সনদটি সংগ্রহ করার জন্য ২৫ থেকে ৫০ টাকা ফি প্রদান করতে হবে। পুরাতন বা হাতের লেখা জন্ম নিবন্ধন মূলত ১৬ সংখ্যার হয়ে থাকে। আপনি যখন আপনার জন্ম নিবন্ধন টি অনলাইন করবেন তখন সেটি ১৭ সংখ্যার নাম্বারে পরিবর্তিত হবে।

সর্বশেষ কথা

যেহেতু জন্ম নিবন্ধন আমাদের ব্যক্তি জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই আপনার স্বর্ণটি যদি পুরনো অথবা হাতের লেখা থাকে তাহলে অতি দ্রুত সেটি অনলাইন করে নিবেন। এবং অনলাইন করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন কোন প্রক্রিয়ায় ভুল না হয় তাহলে আপনার পরবর্তীতে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে গেলে অনেক ঝামেলার সম্মুখীন হতে হবে। যেহেতু জন্ম নিবন্ধন ছাড়া আমাদের কোন কাজেই সম্ভব হবে না তাই অতি দ্রুত আপনার নিবন্ধনটি অনলাইনের আওতাভুক্ত করে নিন।

Avatar photo

By RAFIT SARIF

আমি একজন ফ্রিল্যান্সার, ব্লগার ও গুগল/ইউটিউব এসইও বিশেষজ্ঞ। এই ওয়েবসাইটে ই-সার্ভিস ও সমাধান করার চেষ্টা করেছি! আমি কন্টেন্ট রাইটিং, ওয়েবসাইট অপটিমাইজেশানে দক্ষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *