ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন আবেদন কিভাবে করব

সম্মানিত পাঠক বৃন্দ আসসালামু আলাইকুম অনেকেই মনে করে ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন করা খুবই সহজ আবার অনেকে মনে করে এটি খুব জটিল। আজকে আমরা এই পোস্টটিতে ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন আবেদন করার আপনাদের যে বিভিন্ন জটিলতা রয়েছে। সেই বিষয়ে সেই জটিলতাকে সহজভাবে আপনাদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করব। এই বিষয়ে সম্পূর্ণ ধারণা পেতে চাইলে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পরুণ আশা করি তাহলে আপনাদের সমস্যার সমাধান হবে।

এনআইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন ফি ও  প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ

ফি পরিমান

• ২৩০ টাকা

শিক্ষিত ব্যক্তির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

• জন্ম নিবন্ধন এর সনদপত্র
• ন্যূনতম এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট

শিক্ষাবিহীন ব্যক্তির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

• জন্ম নিবন্ধন এর সনদপত্র
• ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পৌরসভার মেয়র সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এর প্রত্যয়ন পত্র
• বিদ্যুৎ বিল এর কাগজ
• জমির দলিলের একটি কপি
• আবেদনকৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের রেফারেন্স হিসেবে তাদের আইডি কার্ড
• একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক হলফনামা।

পে অর্ডার অথবা ট্রেজারি চালান এর মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদনের ফি 230 টাকা জমা দেওয়া যাবে। আবার অনলাইন থেকে আপনি রকেট অথবা টেবিলের মাধ্যমে আপনি ফ্রি জমা দিতে পারবেন আপনার কাছে যেটি সহজলভ্য মনে হবে আপনি সেটার মাধ্যমে বিল পেয়ে সংশোধন ফি জমা দিবেন।

যে সকল ব্যক্তি ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন করতে পারবেনঃ

যারা শিক্ষিত ব্যক্তি যাদের ন্যূনতম এসএসসি পাসের সার্টিফিকেট রয়েছে অথবা যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর সনদপত্র রয়েছে তারা তারা খুব সহজেই অন্য কোন কাগজ পত্র ছাড়া উক্ত প্রতিষ্ঠান বা পাশের সনদ সংযুক্ত করে সংশোধন আবেদনটি করতে পারবে।

যাদের মূল বয়স ভোটার আইডি কার্ড এর থেকে অনেক ব্যবধান রয়েছে তাদের জন্য প্রতিষ্ঠান এর একটি সনদপত্র অত্যাবশ্যক এতে করে সহজেই এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন    করা যায়।

যে সকল ব্যক্তি ভোটার  আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন এর আবেদন করতে পারবেন নাঃ

অনেকের ক্ষেত্রেই জন্ম তারিখ সংশোধন করতে গেলে মাস এবং তারিখ পরিবর্তন করা সহজ হয়ে থাকে। কিন্তু জন্ম সাল পরিবর্তন করা সহজ কাজ নয় এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়াটি শুধুমাত্র যাদের কোনো প্রতিষ্ঠানিক সার্টিফিকেট নেই তাদের জন্য, সুতরাং যে সকল ব্যক্তিদের এই সংশোধন আবেদন করার জন্য যে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রয়োজন তা যদি না থাকে তাহলে এই প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত জটিল তাই প্রয়োজনীয় কাগজ থাকতে হবে।

ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন

কোন ব্যক্তি যদি তার ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন করতে চায় তাহলে অবশ্যই তাকে এর সংশোধন ফি জমা বাবোধ প্রয়োজনে সকল কাগজপত্র      উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে। এরপরে উপজেলা নির্বাচন অফিসে দায়িত্বরত তদন্তকারী কর্মকর্তারা আপনার সকল কাগজপত্র তদন্ত করে আপনার           আইডি কার্ড জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করে দেবেন। এজন্য অবশ্যই আপনারা আপনাদের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো রাখবেন যাতে প্রয়োজন পড়লেই        আবেদনের ফরমটিতে  আপনাদের সকল তথ্যগুলো নথিভুক্ত করা যায়।
সংশোধন করার পূর্বে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদটি অবশ্যই অনলাইন করে নিবেন এবং জন্ম তারিখ ঠিক করে নেবেন

এখানে আরো পড়ুনঃ জন্ম নিবন্ধন যাচাই করুন অনলাইনে

ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন করার জন্য অনলাইনে আবেদনঃ

যদি বাংলাদেশের আইডি কার্ড সিস্টেম অর্থাৎ Bangladesh NID Application System ওয়েবসাইটটিতে আপনার ব্যক্তিগত আইডি কার্ডের একটি অ্যাকাউন্ট থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই আপনার ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন আবেদন করতে পারবেন। আর যদি সেখানে আপনার অ্যাকাউন্ট না থেকে থাকে তাহলে   আপনি অতি সহজেই উক্ত পোর্টালে একটি অ্যাকাউন্ট করতে পারবেন।

প্রথমে এই লিংকটিতে  প্রবেশ করে আপনার ভোটার আইডি কার্ড ও পাসওয়ার্ডটি দিয়ে লগইন করে নিবেন। এরপরে সেখানে আপনি অবশ্যই একটি এডিট করার অপশন পাবেন সেখান থেকে আপনার জন্ম তারিখটা আপনি নিজেই পরিবর্তন করতে পারবেন। তবে একটি কথা আছে এটি পরিবর্তন করার পূর্বে আপনাকে একটি ইন্টারফেস দেখানো হবে সেখানে অবশ্যই এর জন্য ফি প্রদান করার নির্দেশনা বলি দেখানো হবে আপনি সেটি সুন্দর এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন করবেন বা ফি প্রদান করবেন।

এখানে আপনার এডিট করার অপশনটি কিন্তু অবশ্যই ফি জমা দেওয়ার পরে চালু হবে। ফি জমা দেওয়ার পরে আপনি সংশোধন করার মাত্র একবারই সুযোগ পাবেন ।      তাই সুন্দর এবং সুষ্ঠুভাবে দেখে শুনে তাড়াহুড়া না করে কাজটি সম্পন্ন করবেন।

উপজেলা নির্বাচন অফিসে সরাসরি সংশোধনের আবেদন করার নিয়মাবলীঃ

মাত্র একটি ফরম পূরণ করে আপনি ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ও ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন করতে পারবেন এটি একটি সহজ প্রক্রিয়া। এবং   ফরম পূরণ করে এর প্রণয়নের সাথে আপনি যাবতীয় সফল তথ্য সংযুক্ত করে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এটি সরাসরি     উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে আবেদন করার অপশন।

সংশোধন ফরমটি পূরণ করা ও জমা দেওয়ার নির্দেশনাবলীঃ

শুধুমাত্র আপনার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন করার জন্য উপরের  ফরমের থাকা অতি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সবগুলো ঘর। যেমন আইডি কার্ড নাম্বার, আবেদনকারীর বয়স যদি ১৮ বছরের নিচে হয় তাহলে তার বাবা এবং মায়ের নাম সহ আইডি কার্ডের নাম্বার পূরণ করতে হবে। এরপরে সুন্দরভাবে ফর্মটি ভালো করে     দেখে পড়ে নিবেন।

ফরমের লেখা অনুযায়ী জন্ম তারিখ সংশোধনের ঘরটি ব্যতীত বাকি সব কেটে দিতে হবে। এখানে দেখবেন চ নামক একটি ঘর আছে সেটি জন্ম তারিখের ঘর। এরপরেই প্রথম ঘটিতে বর্তমান ভুল যে জন্ম তারিখটি আছে সেটি সাবমিট করুন। এবং সামনের চাহিদা সংশোধিত ঘরে আপনি নতুন যে জন্ম নিবন্ধন জন্ম তারিখটি দিতে চান        সেটি দিয়ে দিবেন। এবং উপরে নিচে দুই জায়গায় আপনার স্বাক্ষর দিয়ে দিবেন। যদি সবকিছু পূরণ করা শেষ হয়ে থাকে তবে আবেদন কি জমা দেবেন নির্ধারিত                    টাইম অনুযায়ী। আর উক্ত ফর্মটির সাথে প্রয়োজনীয় সকল কাগজ পাতি সংযুক্ত করে উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিয়ে দিবেন।

আইডি কার্ড জন্মতারিখ আবেদন ফরম ডাউনলোড করার লিঙ্কঃ

http://www.nidw.gov.bd/download/NIDForms/print_mistake_correction_form1.pdf

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন সময় লাগেঃ

সাধারণভাবে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে মূলত দুই মাসের সময় নিয়ে থাকে। জন্ম তারিখ সংশোধনের নির্ধারিত             সময়ে ১ বা ২ মাসের বেশি হবে না হয়তো। যদি এর থেকে বেশি সময় নিয়ে থাকে তাহলে রাজধানী অথবা উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে যোগাযোগ করবেন।

শেষ কথা

উপরোক্ত তথ্যগুলো আশা করি আপনাদের সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করবে। উপরোক্ত আর্টিকেলে সম্পূর্ণ সহজভাবে প্রক্রিয়াটি বর্ণনা করা হয়েছে ।                    জন্ম নিবন্ধন সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য জানতে ভিজিট করুন https://questionhack.com/এই ওয়েবসাইট এ।